খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্যকে (প্রোভিসি) তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কুয়েটে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘাত, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও অনশন ধর্মী প্রতিবাদসহ নানা অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এসব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, শীঘ্রই একটি সার্চ কমিটি গঠন করে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদে নতুন ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হবে। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিক রাখার জন্য জ্যেষ্ঠতম একজন অধ্যাপককে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল ও যুবদলের কর্মীদের সঙ্গে কিছু শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় প্রায় ৫০ জন আহত হন। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের এক সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরবর্তীতে, ১৩ এপ্রিল কিছু শিক্ষার্থী প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ১৪ এপ্রিল এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। এই সিদ্ধান্ত পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
এরই ধারাবাহিকতায়, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ২২ এপ্রিল থেকে কুয়েটের ২৯ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। এ অবস্থায় শিক্ষামন্ত্রীর উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করলেও তারা সফল হননি। এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করতে থাকেন।
এর আগে অধ্যাপক মাছুদ ব্যক্তিগতভাবে পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছিলেন, “সরকার চাইলে আমি পদ ছাড়ব, কিন্তু নিজে থেকে নয়।” অবশেষে সরকারই তাকে ও প্রোভিসিকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: