বাংলাদেশে প্রকৌশল খাতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা কাঠামোগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী প্রকৌশলীদের সাংবিধানিক অধিকার, মেধা ও যোগ্যতার যথাযথ মূল্যায়নের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত।
বৃহস্পতিবার(২৪ এপ্রিল) বেলা ১২.৩০ টায় ড.এমএ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে প্যারিস রোডে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এই সমাবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের শতাধিক শিক্ষার্থী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি উত্থাপন করে বলেন এই দাবিগুলো দেশের প্রকৌশল ব্যবস্থাপনায় ন্যায্যতা, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আইসিই বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত আবু সালেহ বলেন, কোন পরীক্ষা না দিয়েই ৯ম গ্রেডের ৩৩% পোস্ট ডিপ্লোমা গ্র্যাজুয়েটরা ১০ম গ্রেড থেকে প্রমোশন পেয়ে যায়। আবার, ১০ম গ্রেডে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা এপ্লাই করার কোন সুযোগ পায়না। এটা চরম বৈষম্য। জুলাই-এর বাংলাদেশে আর কোন বৈষম্য চলবেনা।
ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ মাহমুদ ফয়সাল বলেন, ডিপ্লোমাধারীরা যদি ৯ম গ্রেডে উঠতে চায়, তবে তাদের আমাদের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়েই উত্তীর্ণ হতে হবে। একইসাথে ১০ম গ্রেডের পদটি সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে, যেন ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় শিক্ষার্থীই প্রতিযোগিতার সুযোগ পায়। এছাড়া ডিপ্লোমাধারীদের ৬টি দাবির মধ্যে অনেকগুলোই অযৌক্তিক।
আইসিই বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান হাওলাদার বলেন,
বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা বেশি যোগ্যতা সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও ১০ম গ্রেডে ডিপ্লোমাধারীরা ১০০% দখল করে রেখেছে। এমনকি আমরা কঠিন পরীক্ষা দিয়ে ৯ম গ্রেডে ঢুকলেও তারা ৭ বছর চাকরি করে কোনো পরীক্ষা না দিয়েই পদোন্নতি পেয়ে সেখানে উঠে যাচ্ছে—এটা চরম বৈষম্য। খাতা-কলমে ৯ম গ্রেডে পদোন্নতির জন্য ৩৩% কোটা থাকলেও সিন্ডিকেট তৈরি করে ৯ম গ্রেডের ৫০%-ই তারা দখল করে রেখেছে।
শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবিগুলো:
১. ইঞ্জিনিয়ারিং ৯ম গ্রেড সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং বিএসসি ডিগ্রিধারী হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামেও সমমান পদ তৈরি করে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
২. টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেড উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। অর্থাৎ ডিপ্লোমা ও বিএসসি উভয় ডিগ্রিধারীকে পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে।
৩. ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ “ইঞ্জিনিয়ার” পদবি ব্যবহার করতে পারবে না। এই মর্মে আইন পাস করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, দাবিগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন না হলে তারা দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিতে বাধ্য হবেন।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: