[email protected] শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
২৫ বৈশাখ ১৪৩২

চীন সফরের অগ্রগতি পর্যালোচনায় চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার রূপরেখা প্রণয়ন

আসাদুল্লাহ

প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২২:১৮

সংগৃহিত ছবি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার স্টেট গেস্ট হাউস যমুনায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠক করেন। সাম্প্রতিক চীন সফরের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণই ছিল আলোচনার মূল উদ্দেশ্য।

বৈঠকে উভয় পক্ষ অবকাঠামো, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৃহীত পরিকল্পনাগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “চীন সফরের সময় যেসব পরিকল্পনা আলোচিত হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন এখন আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার। আমরা চাই গতি যেন হারিয়ে না যায়।”

চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে একাত্মতা প্রকাশ করে জানান, “চীনে আমাদের উচ্চপর্যায়ের এজেন্ডাভিত্তিক বৈঠক হয়েছে, এবং আমরা আর বিলম্ব করতে চাই না—চুক্তিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত।”

বৈঠকে মোংলা ও আনোয়ারা অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন, চারটি নতুন জাহাজ কেনা, এবং জুন মাসের মধ্যেই সরবরাহ সম্পন্ন করার আশ্বাস উঠে আসে। এছাড়া, চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর আসন্ন বাংলাদেশ সফর ও চীনা বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে একটি ক্ষুদ্র বিনিয়োগ সম্মেলনের পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়।

স্বাস্থ্যখাতে সহযোগিতার প্রসঙ্গে চীনা পক্ষ বাংলাদেশে ১,০০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ এবং চট্টগ্রামে একটি বার্ন ইউনিট স্থাপনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।

চীনের কুনমিং থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম ফ্লাইট চালু, চিকিৎসা ভিসা সহজীকরণ এবং বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান নিয়েও অগ্রগতি হয়েছে বলে রাষ্ট্রদূত জানান।

প্রধান উপদেষ্টা সাংস্কৃতিক বিনিময়ে গুরুত্বারোপ করে বলেন, “তরুণ প্রজন্ম যেন চীনা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে জড়িত হতে পারে, সেজন্য একটি চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার সময় এসেছে।”

দীর্ঘমেয়াদী পানি ব্যবস্থাপনার জন্য তিস্তা নদী সিস্টেমে ৫০ বছরের একটি মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণের অঙ্গীকারও উভয় পক্ষ পুনর্ব্যক্ত করে।

প্রধান উপদেষ্টা পাট রপ্তানি, কৃষিপণ্য যেমন আম ও কাঠাল রপ্তানি, এবং চট্টগ্রাম ও সৈয়দপুরে রেল লোকোমোটিভ ম্যানুফ্যাকচারিং ও মেইনটেন্যান্স হাব তৈরির প্রস্তাবও উত্থাপন করেন।

তিনি বলেন, “আগামী বছর কাঠালের রপ্তানির পাশাপাশি এবার চীনে আম পাঠানো হবে। আমি নিজেই প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-কে এক ঝুড়ি তাজা আম পাঠাব।”

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খালিউর রহমান, বিডা চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুন, বিশেষ সহকারী ফয়েজ তাইয়েব, ক্যাবিনেট সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোরশেদ।

আলোকিত গৌড়/এম.আর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর