[email protected] শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
২৫ বৈশাখ ১৪৩২

ড. ইউনূসকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস কাতারের প্রধানমন্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:৪১

সংগৃহিত ছবি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানি।

বৃহস্পতিবার কাতারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শেখ মোহাম্মদ বাংলাদেশের বর্তমান পুনর্গঠন প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, “বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আমরা একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী মনোনীত করবো।” তিনি বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এক নতুন, শক্তিশালী বাংলাদেশ গঠনের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টা কাতারকে কূটনৈতিক, আর্থিক এবং বিনিয়োগ খাতে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের তরুণদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে আপনাদের সহায়তা প্রয়োজন।”

রোহিঙ্গা সংকট ও গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা
বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটও গুরুত্ব পায়। অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানান। কাতারের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাতার সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

গাজার মানবিক সংকট নিয়েও আলোচনা হয়। অধ্যাপক ইউনূস বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতায় দুঃখ প্রকাশ করেন। কাতারের প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানকে ধন্যবাদ জানান।

তিন-শূন্য মানুষ গঠনের আহ্বান ইউনূসের
একইদিনে দোহায় কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে “তিন শূন্যের পৃথিবী” শীর্ষক বক্তৃতায় অধ্যাপক ইউনূস শিক্ষার্থীদের ‘তিন-শূন্য মানুষ’— শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নিট কার্বন নিঃসরণ— হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “তোমরাই মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম— সুপারম্যান ও সুপারওম্যান।”

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূসকে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে অবদানের জন্য সম্মানসূচক পুরস্কার প্রদান করা হয়।

বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে কাতারে বৈঠক
বুধবার রাতে দোহায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশকে একটি উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তর করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ ও কাতারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বৈঠকে জ্বালানি, ব্যাংকিং, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পর্যটন খাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এখন ব্যবসায় ফিরেছে— এবং তা আরও বড় পরিসরে। আমরা আপনাদের অংশীদারিত্ব চাই।”

কাতারি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ আহ্বান
এক অনুষ্ঠানে কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, আপনারা এ সুযোগ গ্রহণ করুন।” অনুষ্ঠানে টেলিনর-গ্রামীণফোন প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বিনিয়োগে লাভজনক গন্তব্যে পরিণত হতে পারে।”

বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সরকারের নেয়া সংস্কারমূলক পদক্ষেপ উপস্থাপন করেন। জ্বালানি উপদেষ্টা জানান, কাতার এনার্জির কাছে থাকা ২৫৪ মিলিয়ন ডলারের বকেয়া শোধ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে কাতারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর