[email protected] শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
২ শ্রাবণ ১৪৩২

মৌলিক সংস্কারে বাধা সৃষ্টি করছে বিএনপি: এনসিপি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২৫, ২১:৪৪

সংগৃহিত ছবি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চলমান সংলাপে মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে বিএনপি ও কয়েকটি রাজনৈতিক দল বাধা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার ১৪তম দিনের আলোচনাসভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, সব দল ছোটখাটো সংস্কার প্রস্তাব মেনে নিলেও মৌলিক সংস্কার নিয়ে আলোচনা শুরু হলেই বিএনপি সরে যাচ্ছে এবং প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। তারা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করছে যাতে মৌলিক সংস্কারের এজেন্ডাগুলো চূড়ান্ত প্রস্তাবে না আসে।

আখতার হোসেন বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা ও অনুচ্ছেদ ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং নতুনভাবে যুক্ত হতে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ক অনুচ্ছেদগুলো (৫৮(খ), ৫৮(গ), ৫৮(ঘ)) ভবিষ্যতে সংশোধনের প্রয়োজন হলে গণভোটের মাধ্যমে তা অনুমোদনের প্রস্তাব দিয়েছে এনসিপি। পাশাপাশি সংবিধান সংশোধনের জন্য সংসদের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের পাশাপাশি বিশেষ অনুচ্ছেদগুলোতে গণভোটের বাধ্যবাধকতা চান তারা।

সংসদে উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব তুলে ধরে আখতার বলেন, এনসিপি চায় উচ্চকক্ষ পিআর বা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে গঠিত হোক। যাতে এক শতাংশ ভোট পেলেই একটি রাজনৈতিক দল উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পায়। এতে বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং কার্যকর চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।

তিনি অভিযোগ করেন, অধিকাংশ দল উচ্চকক্ষ ও পিআর পদ্ধতি নিয়ে একমত হলেও বিএনপি ও কিছু দল এর বিরোধিতা করছে। এমনকি উচ্চকক্ষ নিয়ে আলোচনাও যেন চূড়ান্ত প্রস্তাবে না আসে, সে চেষ্টাও করছে তারা।

আখতার হোসেন বলেন, কিছু দল সংস্কারের সংখ্যাগত বিশ্লেষণে গিয়ে বলছে— ২০টি প্রস্তাবের মধ্যে ১২টি মানি, ৮টি মানি না। এমন একটি অবস্থান নিয়ে তারা মূল সংস্কার থেকে সরে যাচ্ছে। বিশেষ করে যখন সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষ নিয়োগের জন্য সমন্বিত কমিটির প্রস্তাব আনা হয়, কিংবা যখন উচ্চকক্ষে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেওয়া হয়— তখন তারা তাতে রাজি হচ্ছে না। অথচ এটাই হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক কাঠামো মেরামতের মূল অংশ।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের ভাঙা পায়ে ব্যান্ডেজ দেওয়া হলেও, হাড় জোড়া লাগানোর সময় এরা পিছিয়ে যাচ্ছে। তাদের অবস্থান হলো, ব্যান্ডেজই যথেষ্ট— হাড় জোড়া লাগানোর দরকার নেই।

আখতার হোসেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মৌলিক সংস্কার ছাড়া যদি জুলাই সনদের দিকে অগ্রসর হওয়া হয়, তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। এনসিপি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চায়, তবে কেউ যদি বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে রাজপথে নেমে আন্দোলনের পথেও তারা যেতে প্রস্তুত।

তিনি জানান, এনসিপি যেসব বিষয়কে মৌলিক সংস্কার হিসেবে বিবেচনা করছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির নিয়োগে নিরপেক্ষ পদ্ধতি, উচ্চকক্ষের কার্যকর গঠন এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে দলীয় প্রভাবমুক্ত সমন্বিত নিয়োগ ব্যবস্থা।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর