পটুয়াখালীর দুমকীতে শহীদ কন্যা ও কলেজছাত্রী লামিয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার প্রধান পলাতক আসামি ইমরান মুন্সি (১৭) গ্রেপ্তার হয়েছেন।
রবিবার (১১ মে) বিকেল ৫টার দিকে বরিশালের এয়ারপোর্ট থানাধীন কাশিপুর ইছাকাঠি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. সাজেদুল ইসলাম সজল।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৯ জুলাই ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে’ পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন লামিয়ার বাবা জসিম উদ্দিন। পরে ৩০ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর লামিয়া তার নানাবাড়ি, দুমকীর আলগী গ্রামে বসবাস শুরু করেন। তার মা ঢাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন।
গত ১৮ মার্চ বাবার কবর জিয়ারত শেষে দাদাবাড়ি থেকে ফেরার পথে লামিয়াকে জোরপূর্বক অপহরণ করে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ২০ মার্চ দুমকী থানায় মামলা করেন তিনি। মামলায় অভিযুক্ত করা হয় সহপাঠী সিফাত মুন্সি ও মেহেরুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র শাকিব মুন্সিকে। মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা লামিয়াকে অপহরণ করে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে এবং সেই দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে।
পরে গ্রেপ্তারকৃত সিফাত ও শাকিব আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারা ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করে এবং আরও একজন জড়িত হিসেবে ইমরান মুন্সির নাম প্রকাশ করে।
দুই আসামির স্বীকারোক্তি ও ভিডিওচিত্র ভাইরালের ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন লামিয়া। একপর্যায়ে গত ২৬ এপ্রিল রাতে ঢাকার শেখেরটেক এলাকায় তার মায়ের বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি। পরদিন নিজ গ্রামে জানাজা শেষে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও শোকের ছায়া নেমে আসে। দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্থানীয়দের মধ্যে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে।
পটুয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই ঘটনায় জড়িত কেউই রেহাই পাবে না। তদন্তের স্বচ্ছতা বজায় রেখে অপরাধীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: