[email protected] বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২ আশ্বিন ১৪৩২

মানবসভ্যতার মুক্তির দিশারি মহানবী (সা.)

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৫

ফাইল ছবি

মানবসভ্যতা যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত, তখন ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—কেবল একজনই মানবতার প্রকৃত ত্রাণকর্তা ছিলেন, তিনি হলেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর দয়া, ন্যায়, সত্য আর শিক্ষাই মানবতার মুক্তির একমাত্র।

মক্কার বুকে নবীজির আগমন হয়েছিল এক অমানবিক সময়ে। গোত্রীয় যুদ্ধ, মদ-জুয়া, দাসপ্রথা আর নারী নিপীড়নে ভরা সমাজে তিনি এনেছিলেন জ্ঞানের আলো। প্রথম ওহি ছিল—“পড়ো, তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।” (সুরা আল-‘আলাক, আয়াত: ১)। এ আহ্বানই মানবতাকে দিয়েছে নতুন দিশা।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সীমাহীন দয়ার প্রতীক। তায়েফে রক্তাক্ত অবস্থায়ও তিনি শত্রুদের জন্য হেদায়াতের দোয়া করেছিলেন। তাঁর ক্ষমাশীলতা সম্পর্কে ইবনে কাসীর মন্তব্য করেন—এটি “অসীম সমুদ্রের মতো।”

নারীকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন তিনি। বলেছেন—“তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে উত্তম আচরণ করে।” শিশুদের জন্যও ছিলেন অশেষ ভালোবাসার প্রতীক। দাসপ্রথা বিলুপ্তিতে এনেছেন বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

মদিনায় হিজরত করে তিনি গড়েছিলেন প্রথম বহুধর্মীয় সমাজচুক্তি—‘মদিনার সনদ’। তাঁর ন্যায়বিচারের উদাহরণ ইতিহাসে বিরল। এক প্রভাবশালী নারী চুরির ঘটনায় তিনি ঘোষণা দেন—“আমার কন্যা ফাতিমা-ও যদি চুরি করত, তবে আমি তার হাত কেটে দিতাম।”

বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ, বৈষম্য, নারী নির্যাতন আর ভোগবাদে মানুষ দিশাহারা। কোটি শিশু ক্ষুধার্ত, নারী নিপীড়িত, দুর্বলরা পিষ্ট। মানবসভ্যতা যেন আবার জাহেলিয়াতের আঁধারে।

এই আঁধার ভেদ করতে পারে কেবল নবীজির আলো। তাঁর শিক্ষা প্রতিষ্ঠিত হলে পৃথিবী রূপ নেবে শান্তির বাগানে। তাঁর বাণী—“তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা চায়, তা-ই তার ভাইয়ের জন্যও না চায়।” (বুখারি, হাদিস : ১৩; মুসলিম, হাদিস: ৪৫)—মানবতার শ্রেষ্ঠ সংবিধান।

মানবতা আজ ত্রাণকর্তার খোঁজে। অথচ ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—মুহাম্মদ (সা.)-ই সেই ত্রাণকর্তা। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা—তিনি যেন আমাদের অন্তরে নবীজির ভালোবাসা ও আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন, যেন তাঁর দেখানো পথে চলেই আমরা মানবতার মুক্তি ও শান্তি অর্জন করতে পারি।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর