মানবসমাজে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম ভিত্তি হলো ক্রয়-বিক্রয় ও সেবা আদান-প্রদান। এ ক্ষেত্রে চাহিদা ও যোগান নীতি একটি স্বাভাবিক ও কার্যকর প্রক্রিয়া।
ইসলাম মানুষের অর্থনৈতিক জীবনকে স্বচ্ছ, ন্যায়সঙ্গত ও ভারসাম্যমূলক করার জন্য বাজার ব্যবস্থার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করে। কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানো, জবরদস্তি করে মূল্য নির্ধারণ কিংবা দালালির মাধ্যমে বাজারে অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি করা ইসলামে নিষিদ্ধ।
বাজারদর নির্ধারণে স্বাধীনতা
ইসলামে বাজারদর নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো বলপ্রয়োগ বা জবরদস্তি কাম্য নয়। কেনা-বেচায় ক্রেতার প্রয়োজনই চাহিদা আর বিক্রেতার প্রস্তুতিই যোগান। উভয়ের মিলনে স্বাভাবিক বাজারদর নির্ধারিত হয়। কোরআনেও জীবিকার বণ্টন ও পারস্পরিক নির্ভরশীলতার বিষয়টি উল্লেখ আছে (সুরা জুখরুফ, আয়াত : ৩২)।
কৃত্রিম বাধা নিষিদ্ধ
রাসুলুল্লাহ (সা.) বাজারে দালালি বা তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ করেছেন। কারণ এতে গ্রামীণ বিক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং বাজারদরের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয়। তিনি বলেন—“শহরের লোক গ্রামের লোকের পক্ষ হয়ে বিক্রয় করবে না। মানুষদের মুক্ত ছেড়ে দাও, আল্লাহ একে অপরের মাধ্যমে রিজিক প্রদান করেন।” (মুসলিম, হাদিস : ১৫২২)।
রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ এড়িয়ে চলা
একবার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলে লোকেরা নবীজিকে বাজারমূল্য বেঁধে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। তিনি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “আল্লাহই মূল্য নির্ধারণকারী, তিনিই নিয়ন্ত্রক, প্রশস্তকারী ও রিজিকদাতা।” (তিরমিজি, হাদিস : ১৩১৪)। অর্থাৎ কৃত্রিমভাবে দাম বেঁধে দেওয়া ইসলামে অনুমোদিত নয়।
ইসলামী অর্থনীতির মূলনীতি
ইসলাম বাজারকে স্বাভাবিকভাবে চলমান রাখতে চায়। প্রতারণা, জবরদস্তি বা অপ্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ পরিহার করে চাহিদা ও যোগানের সৃষ্টিগত ভারসাম্যের মাধ্যমেই ন্যায়সঙ্গত বাজারদর প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: