[email protected] শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৪ আশ্বিন ১৪৩২

সফরে জুমা আদায় করা যাবে কি? কী বলছেন ইসলামি বিশেষজ্ঞরা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৯

ফাইল ছবি

জুমার নামাজ মুসলমানদের জন্য সপ্তাহিক বৃহৎ ইবাদত ও সম্মিলনের নাম। তবে সফর বা ভ্রমণের সময় জুমার নামাজ আদায় করা যাবে কি না—এ নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে। ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতে, সফরে থাকা অবস্থায় জুমার নামাজ আদায় বিষয়ে শরিয়তের নির্দিষ্ট কিছু বিধান রয়েছে, যেগুলো জানা জরুরি।

জুমা আদায়ের জন্য কতজন মুসল্লি প্রয়োজন?

জুমা শব্দের অর্থ—সম্মিলন বা জমায়েত। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ একা আদায় করা গেলেও জুমার নামাজ একা কিংবা দুই-তিনজন মিলে আদায় করা যায় না। এটি সহিহ হওয়ার জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক মুসল্লির জমায়েত বাধ্যতামূলক।

ইমাম আবু হানিফার (রহ.) মতে, জুমা আদায়ের জন্য ইমাম ছাড়া কমপক্ষে তিনজন মুসল্লি থাকতে হবে। অর্থাৎ মোট চারজন হলে শর্ত পূরণ হয়।
ইমাম মালেক (রহ.) এর মতে, ইমামসহ কমপক্ষে ১২ জন এবং
ইমাম শাফেয়ি ও আহমদ (রহ.) এর মতে, চল্লিশজন পুরুষ মুসল্লি ছাড়া জুমা শুদ্ধ হয় না।

জুমা আদায়ের অন্যান্য শর্ত

১. জুমার নির্ধারিত সময়—জোহরের সময়ের মধ্যে আদায় করতে হবে।
২. খুতবার পূর্বে নামাজ—খুতবা ছাড়া জুমা শুদ্ধ হয় না।
৩. সবার জন্য উন্মুক্ত জামাত—জুমার জামাত এমন স্থানে হতে হবে, যেখানে সাধারণ মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করতে পারে। শুধুমাত্র সীমিত জনগোষ্ঠীর জন্য নির্ধারিত জায়গায় জুমা আদায় বৈধ নয়।

সফরে থাকা অবস্থায় জুমা ফরজ নয়

ইসলামি শরিয়তে কোনো ব্যক্তি নিজ শহর থেকে ৪৮ মাইল (৭৭.২৩২ কিলোমিটার) বা তার চেয়ে বেশি দূরত্বে ভ্রমণের নিয়তে বের হলে তিনি মুসাফির হিসেবে গণ্য হন। এমন ব্যক্তির ওপর জুমার নামাজ ফরজ নয়।

হাদিসে এসেছে—

“আল্লাহ ও পরকালের ওপর যাদের ঈমান আছে, তাদের ওপর জুমা ফরজ। তবে অসুস্থ, মুসাফির, নারী, শিশু ও দাসদের ওপর জুমা ফরজ নয়।”
(সূত্র: বায়হাকি, দারাকুতনি)

সফরে জুমা আদায়ের সুযোগ না থাকলে করণীয়

জুমা আদায় সম্ভব না হলে, মুসাফির ব্যক্তি জোহরের নামাজ কসর করে দুই রাকাত আদায় করবেন। এক্ষেত্রে:

একা বা দুইজন মিলে জুমা আদায় করা যাবে না।

কয়েকজন মুসাফির মিলে জুমা আদায় করতে না পারলে, তারা একে একে আলাদা করে জোহরের নামাজ আদায় করবেন।

যে এলাকায় জুমার জামাত হচ্ছে, সেখানে মুসাফিররা জোহরের জামাত করলে তা মাকরুহে তাহরিমি।

সফরে জুমার নামাজ কাজা হয়ে গেলে, পরবর্তীতে কসর হিসেবেই দুই রাকাত নামাজ আদায় করবেন।

উপসংহার

সফরের সময় জুমা আদায়ের বিষয়ে শরিয়তের বিধান অত্যন্ত স্পষ্ট। মুসলিমদের উচিত, এ সংক্রান্ত সঠিক জ্ঞান অর্জন করে পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। সফরে জুমা ফরজ না হলেও, সুযোগ থাকলে আদায় করা ফজিলতপূর্ণ।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর