পরোপকার আল্লাহ তাআলার অত্যন্ত প্রিয় কাজ। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে, সেই শ্রেষ্ঠ মানুষ।” (আল মুজামুল আওসাত, হাদিস: ৫৭৮৭)।
মানুষের উপকার করা যায় নানা উপায়ে—অর্থ, শক্তি, জ্ঞান কিংবা বিদ্যা দিয়ে। আল্লাহ প্রত্যেককে ভিন্ন ভিন্ন যোগ্যতা দিয়েছেন, আর সেই যোগ্যতাকে সৃষ্টির সেবায় কাজে লাগানোই প্রকৃত সাফল্য। তবে পরোপকারের মূল শর্ত হলো ইখলাস, অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কাজ করা। কোরআনে বলা হয়েছে, “আমরা তো তোমাদের খাওয়াই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে। আমরা তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান চাই না এবং কৃতজ্ঞতাও না।” (সুরা দাহর: ৯)।
দান-সদকায় খোঁটা দেওয়া গর্হিত কাজ
দান করে খোঁটা দেওয়া ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। আল্লাহ তাআলা সতর্ক করে বলেছেন, “হে ঈমানদাররা! তোমরা নিজেদের দান-সদকা খোঁটা ও কষ্ট দিয়ে বিনষ্ট করো না…” (সুরা বাকারা: ২৬৪)। এমন দান বর্ষণে মাটি সরে যাওয়া পাথরের মতো ফলশূন্য হয়ে যায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-ও সতর্ক করেছেন এ বিষয়ে। আবু জার (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন—“তিন ব্যক্তির সঙ্গে আল্লাহ কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদের জন্য কঠিন শাস্তি নির্ধারিত। তারা হলো—(১) যে কাপড় টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে পরে, (২) যে উপকারের পর খোঁটা দেয়, (৩) যে মিথ্যা শপথে পণ্য বিক্রি করে।” (মুসলিম, হাদিস: ১০৬)।
খোঁটা ছাড়া দানের বিশেষ পুরস্কার
যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে কিন্তু পরবর্তীতে খোঁটা দেয় না কিংবা কষ্ট দেয় না, তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে। কোরআনে এসেছে, “যারা আল্লাহর পথে ধন-সম্পদ ব্যয় করে এবং খোঁটা দেয় না বা কষ্ট দেয় না, তাদের জন্য তাদের রবের কাছে পুরস্কার রয়েছে। তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তিত হবে না।” (সুরা বাকারা: ২৬২)।
সহযোগিতায় আল্লাহর সাহায্য
অন্য মুসলিম ভাইয়ের সহযোগিতা করা শুধু সওয়াবই নয়, বরং আল্লাহর বিশেষ সাহায্যও নিশ্চিত করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকে।” (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৪৬; তিরমিজি, হাদিস: ১৪২৫)।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: