চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) পাশের একটি বসতবাড়ির ঘর থেকে ১৭ বস্তা ভিজিএফের চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে ইউপি সংলগ্ন মৃত নুরুল ইসলামের বাড়ি থেকে চালের বস্তাগুলো জব্দ করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই চাল পাচারে ইউনিয়ন পরিষদের লোকজন জড়িত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে মৃত নুরুল ইসলামের বাড়ি থেকে সরকারি চালের বস্তা ভ্যান ও ট্রলিতে করে পাশের ইউনিয়নসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতে দেখেন স্থানীয়রা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয়রা মৃত নুরুল ইসলামের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি বদ্ধ ঘরে ১৭ বস্তা চাল জব্দ করেন। এরপর তারা পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে ইসলামপুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ সদস্যরা এসে চালের বস্তাগুলো উদ্ধার করেন।
স্থানীয় চা বিক্রেতা বাবু বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে ১০ টাকার স্লিপে যে চাল দেওয়া হয়, তা আমার দোকানের সামনের এই বাড়িতে স্টক হয়। প্রায় সময় বাইরের লোক এসে এই বাড়ি থেকে ট্রলিতে করে চালের বস্তা নিয়ে যায়। আজকে এক ট্রলি ও গতকাল ২ থেকে ৩ ট্রলি চাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে এই বাড়ি থেকে। এর সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের লোক অবশ্যই জড়িত আছে, কারণ যারা চাল নিয়ে যায় তারা বাইরের লোক। ইউনিয়ন পরিষদের লোক জড়িত না থাকলে তারা কিভাবে চাল নিয়ে যাবে?
স্থানীয় বিএনপি নেতা মহরুল হক বলেন, আজকে খোঁজ পেয়ে এসে দেখলাম ঘরের ভেতর অনেকগুলো চালের বস্তা। এই বাড়ি থেকে আরও মোটামুটি ১০০ বস্তার মতো চাল নিয়ে চলে গেছে। এই চালগুলোতে জনগণের হক, কিন্তু চেয়ারম্যান-মেম্বাররা সাধারণ জনগণকে চাল না দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই এটার ন্যায্য বিচার এবং চোরদের শাস্তি চাই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুল আলম বলেন, একটি বসতবাড়িতে ভিজিএফের চালের বস্তা আছে এমন সংবাদ পেয়ে আমি এখানে আসি এবং একটি ঘরের ভেতরে ভিজিএফের ১৭ বস্তা চাল পাই। এছাড়া স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানলাম গত দুই দিনে প্রায় ৭৫ বস্তা চাল ভ্যানে করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এই চালকাণ্ডের সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের লোকজন জড়িত । দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেওয়া হবে, তাতে সে যত বড়ই ব্যক্তি হোক না কেন।
ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মকবুল হোসেন বলেন, ভিজিএফের কার্ড বিতরণ করেন চেয়ারম্যান এবং মেম্বার। চেয়ারম্যান ও ট্যাগ অফিসারের নেতৃত্বে ভিজিএফের চালগুলো বিতরণ করা হয়েছে। চালগুলো নিয়ে গিয়ে কে কী করেছে তা আমি বলতে পারব না।
এ বিষয়ে জানতে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইসলামপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. শাহিনুর রহমান বলেন, একটি বসতবাড়িতে ভিজিএফের চাল আছে এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি টিম গিয়ে চালের বস্তাগুলো উদ্ধার করে। এই বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে।
আলোকিত গৌড়/এম.এইচ.টি
মন্তব্য করুন: