শিবগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক জিয়াউর রহমানের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও নৈতিকতাবিরোধী আচরণের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।
জাবড়ি কাজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জিয়াউর রহমান গত ৩০ মে এক নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের সময় স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে। এ সময় তাকে একটি খুটির সঙ্গে প্রায় ১৮ ঘন্টা বেঁধে রাখা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, জিয়াউর রহমান অধিকাংশ দিন ক্লাসে অনুপস্থিত থাকেন এবং ক্লাস চলাকালীন অনলাইন গেমস ও ক্যাসিনো খেলায় ব্যস্ত থাকেন। এ ছাড়া তিনি মাদ্রাসার ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করেন এবং পরীক্ষায় ফেল করার হুমকি দিয়ে তাদের চেপে রাখার চেষ্টা করেন।
কয়েকজন সাবেক শিক্ষার্থী জানান, জিয়াউর রহমানের অসদাচরণের কারণে অনেকেই মাদ্রাসা ছেড়ে চলে গেছেন। তারা বলেন, তিনি ক্লাসে শিক্ষাদানের পরিবর্তে গেম খেলতেন এবং ছাত্রীদের বিভিন্ন বাজে ইংগিত দিয়ে উত্ত্যক্ত করতেন। আমরা তার স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করছি।
মাদ্রাসার একাধিক অভিভাবক জিয়াউর রহমানের আচরণকে "অস্বাভাবিক ও নিন্দনীয়" আখ্যায়িত করেন। এক অভিভাবক বলেন, তিনি শুধু নিজেই অনৈতিক কাজে জড়িত নন, বরং ছাত্রীদেরও ভুল পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। আমার মেয়ে কয়েকবার তার অশালীন আচরণের কথা বলেছে, কিন্তু ভয়ে মুখ খুলতে পারেনি।
মাদ্রাসা একটি পবিত্র প্রতিষ্ঠান। এখানে জিয়াউর রহমানের মতো ব্যক্তির স্থান হওয়া উচিত নয়। আমরা দ্রুত তদন্ত ও তার কঠোর শাস্তি চাই।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সাদিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমাদের নজরে আসার পরই জিয়াউর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে মাউশি (মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড) এর একজন কর্মকর্তাসহ তিন সদস্য রয়েছেন। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা জিয়াউর রহমানের পাশাপাশি একই মাদ্রাসার গণিত শিক্ষকের বিরুদ্ধেও অনিয়মের অভিযোগ তুলে তাদের অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানান।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন সাময়িক স্থগিত রেখেছে। তবে তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তারা সতর্ক অবস্থানে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: