[email protected] বৃহঃস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫
২৯ শ্রাবণ ১৪৩২

ভোলাহাটে ইউএনও ও জামায়াতের সহযোগিতায় নতুন ঘর পেলেন সেই বৃদ্ধা

মোঃ সুহাস উদ্দিন

প্রকাশিত: ১২ আগষ্ট ২০২৫, ২০:৩৬
আপডেট: ১২ আগষ্ট ২০২৫ ২০:০৮

ঘরের ফিতা কাটছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে মানবিক এক উদ্যোগে নতুন আশ্রয় পেলেন ৯৫ বছরের বেগম। ছয় সন্তানের জননী হলেও দীর্ঘদিন তিনি ছিলেন রাস্তার ধারে জরাজীর্ণ খড়ের ঘরে। সম্প্রতি আলোকিত গৌড়ে তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর এগিয়ে আসে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়রা।

স্বামী ইদ্রিস আলীর মৃত্যুর পর থেকে একাই জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন এই প্রবীণ নারী। তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে থাকলেও কেউ পাশে নেই। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে অবহেলা ও দারিদ্র্যই ছিল তার সঙ্গী। একাধিকবার অন্যত্র যাওয়ার প্রস্তাব পেলেও তিনি রাজি হননি। তিনি বলেছিলেন “এই মাটিতেই যেন মরতে পারি, এখানেই থাকবো।”

প্রতিবেদন প্রকাশের পরে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান অসহায় বেগমের ঘর তৈরির জন্য দুই বান্ডিল টিন এবং ছয় হাজার টাকার নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। একই সাথে বিষয়টি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় প্রতিনিধিদের নজরে আসলে তারা সার্বিক সহযোগিতায় ঘরটি নির্মাণ করে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান ফিতা কেটে ঘরটির উদ্বোধন করেন এবং বেগমের হাতে শুকনো খাবার তুলে দেন। পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের এমপি প্রার্থী ড. মিজানুর রহমান নবনির্মিত ঘরটি পরিদর্শন করেন এবং সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

ঘরটি বুঝিয়ে পেয়ে আবেগঘন অবস্থায় বেগম বলেন, “আমি ভাবিনি এই বয়সে কেউ আমার কথা শুনবে। আল্লাহ যেন ওদের ভালো রাখে, যারা আমার মতো মানুষকে ঘর দিলো। এখন অন্তত বৃষ্টি-ঝড়ের ভয় নেই।”

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত এমপি প্রার্থী ড. মিজানুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কাজ করে আসছে। তারই একটি ছোট্ট অংশ হলো এইটা। ইউএনও মহোদয়সহ জামায়াতে ইসলামী ভোলাহাট উপজেলা শাখাকে ধন্যবাদ জানাই তারা এই মানবিক কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য।

ঘরটি উদ্বোধনের সময় ইউএনও মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “একজন নাগরিক হিসেবে এভাবে কেউ থাকতে পারে না। সাংবাদিকরা বিষয়টি সামনে এনেছেন, আর আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যদি সমাজের সবাই সামান্য সহানুভূতি দেখায়, তাহলে আর কেউ অভুক্ত বা গৃহহীন থাকবে না।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর