চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার মুসরিভুজা গ্রামের এক অতি সাধারণ ঘরে বেড়ে ওঠা রবিউল ইসলাম (৬৫) এলাকায় পরিচিত ‘ছন্দের কবি’ হিসেবে। পেশায় তিনি একজন কামার হলেও তার মুখে মুখে রচিত ছন্দ আর কবিতায় ফুটে ওঠে গ্রাম বাংলার জীবন, ভাষা আর অনুভব। স্থানীয়দের অনেকেই তাকে আঞ্চলিক কবি হিসেবে চেনেন।
পারিবারিক দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে শৈশবকাল থেকেই হাতুড়ি আর আগুনের সঙ্গে তার কর্মজীবন শুরু। প্রায় অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে কামার পেশায় যুক্ত ছিলেন রবিউল ইসলাম। তবে গত বছর এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার একটি পা ভেঙে গেলে হঠাৎ করেই থেমে যায় জীবিকার চাকা। দুর্ঘটনার পর থেকে কাজ করতে না পারায় বন্ধ হয়ে যায় পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস।
এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে তার পরিবার এখন চরম আর্থিক সংকট আর হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। অসুস্থ শরীর আর সীমিত সামর্থ্যের কারণে চিকিৎসা ও সংসার চালানো দুটোই হয়ে উঠেছে কঠিন।
রবিউল ইসলাম বলেন, “আমি কোনো বড় চাওয়া চাই না। আমার এই ছন্দের কবিতাগুলো যদি গ্রাম বাংলার প্রতিচ্ছবি হিসেবে কেউ লিপিবদ্ধ করে রাখে, সেটাই আমার সবচেয়ে বড় সার্থকতা। আর যদি সংশ্লিষ্ট কেউ আমার এই অবস্থার দিকে একটু নজর দেন, তাহলেই বাঁচার পথ পাই।”
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. লোকমান আলী বলেন, “রবিউল ইসলামের মতো মানুষরা আমাদের লুকিয়ে থাকা সম্পদ। এ ধরনের আঞ্চলিক প্রতিভাদের মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরা দরকার, যাতে গ্রাম বাংলার মায়ের ভাষা ও সংস্কৃতির মর্ম এই ছন্দের কবিতার ভেতর দিয়ে সবার কাছে পৌঁছে যায়।”
অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসা এই ছন্দের কবির দিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সমাজের সচেতন মহলের দৃষ্টি এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: