[email protected] শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনে উত্তপ্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষক-ছাত্রী একই রুমে থাকার ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ

আবু বকর সৈকত

প্রকাশিত: ১৭ মে ২০২৫, ২০:৫০

ছবিঃ আলোকিত গৌড়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফাইন্যান্স বিভাগের এক শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রীর আপত্তিকর অবস্থায় থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের দুই সাংবাদিকসহ চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইল করে তিন লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ করা হয়েছে।

শনিবার (১৭ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলায় উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। 

সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী শিক্ষার্থী জানান, গত ১১ মে পড়া বুঝতে শিক্ষকের চেম্বারে গিয়েছিলেন। সকালে যাওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষকের ব্যস্ততার কারণে তিনি বিকেলে যান। পড়া বুঝতে বুঝতে সন্ধ্যা হয়ে গেলে হঠাৎ কয়েকজন ব্যক্তি চেম্বারে নক করেন। দরজা খুলে দেওয়ার পর তারা রুমে ঢুকে প্রথমে তার গায়ে হাত দেন, যার ফলে তার ওড়না পড়ে যায়। এরপর তারা তাকে ধর্ষণের হুমকি দিয়ে মোবাইলে ভিডিও করার কথা বলেন। ভয় পেয়ে তিনি টেবিলের নিচে লুকিয়ে পড়েন। পরে তারা তাকে বের করে নিয়ে আসে এবং গামছা মাথায় দিয়ে বের হতে বলেন। 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, অভিযুক্তরা প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে শিক্ষক তার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এক লাখ টাকা দেন। পরের দিন আরও দুই লাখ টাকা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সাংবাদিকসহ চার শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করেন। তারা হলেন: কালবেলা পত্রিকার রাবি প্রতিনিধি সাজ্জাদ হোসেন সজীব, খবরের কাগজের রাবি প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম সুমন, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব (২০১৭-১৮ সেশন), আইবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ

অভিযোগ অস্বীকার করে একই দিন বেলা ১২টায় সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন সজীব ও সিরাজুল ইসলাম সুমন সংবাদ সম্মেলন করেন। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, গত ১১ মে সন্ধ্যায় তারা শিক্ষক হেদায়েত উল্লাহর চেম্বারে এক ছাত্রীর সঙ্গে থাকার খবর পান। প্রক্টরের অনুমতি নিয়ে তারা চেম্বারে যান এবং দেখেন রুমের লাইট বন্ধ। নক করলে শিক্ষক দরজা খুলে দেন। রুমে ঢুকে তারা টেবিলের নিচে ওই ছাত্রীকে লুকিয়ে থাকতে দেখেন। শিক্ষক নিজেই তাকে বের করে আনেন। 

তারা জানান, ছাত্রীটি ভিডিও বা সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন এবং আত্মহত্যার হুমকি দেন। বিষয়টি প্রক্টরকে জানানো হলেও শিক্ষকের অনুরোধে বিস্তারিত বলা হয়নি। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ঘটনা জানানো হয় এবং লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু এর মধ্যেই একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। 

সাংবাদিকদ্বয় দাবি করেন, তাদের সঙ্গে শিক্ষক বা ছাত্রীর কোনো টাকা লেনদেন হয়নি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল অনৈতিক ঘটনাটি প্রশাসনের নজরে আনা। তারা অভিযোগ করেন, শিক্ষক ও ছাত্রী মিথ্যা ঘটনা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। 

ঘটনাটি নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। উভয় পক্ষের বক্তব্যে বড় ধরনের পার্থক্য থাকায় বিষয়টি তদন্তের অপেক্ষায় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

আলোকিত গৌড়/এম.আর

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর