রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) স্থায়ী ক্যাম্পাস এলাকায় ১ হাজার ৮৫৩টি গাছ মাত্র ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে রোমিন এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানটি। তবে অভিযোগ উঠেছে, দরপত্র জমা দিতে আগ্রহী অন্যান্য ব্যবসায়ীদের বাধা দেওয়া হয়েছে।
রামেবি সূত্রে জানা যায়, পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। রোমিন এন্টারপ্রাইজের পরই ১৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা দর দেয় আরেক প্রতিষ্ঠান। বাকিদের দর ১৮ লাখ, ৮ লাখ ও ৬ লাখ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেট করে দর কমিয়ে গাছগুলো হাতিয়ে নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে, ১ হাজার ৮৫৩টি গাছের ক্ষেত্রে কাঠ ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৬৪০ ঘনফুট, বল্লির পরিমাণ ২২৭টি এবং এসব গাছ থেকে জালানি কাঠ ধরা হয়েছে ৭ হাজার ১৯ ঘনফুট।
একজন পেশাদার কাঠ ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি সেফটি কাঠের দাম ৭০০ টাকা ধরলেও এর মোট দাম হয় ৩৯ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। জালানি কাঠের দাম প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। আর বল্লিগুলোর দাম পড়ে প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে গাছগুলোর মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৪২ লাখ ২১ হাজার টাকা। অথচ সেই গাছ সিন্ডিকেটটি হাতিয়ে নিয়েছে মাত্র ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে সোমবারই শুকুর শেখ, ফারজানা ববি ও জাকারিয়া হোসেনসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ওই সিন্ডিকেট তাদের দরপত্র জমা দিতে বাধা দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছিল নির্বিকার। এ চক্রের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্তারা জড়িত বলেও তাদের অভিযোগ।
অভিযোগে বলা হয়েছে, দরপত্র জমা দিতে গেলে কিছু ঠিকাদারকে শারীরিকভাবে বাধা দেওয়া হয়। অভিযোগকারীরা বলেন, সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ছত্রচ্ছায়ায় কাজ করেছে।
কাঠ ব্যবসায়ীদের হিসাব অনুযায়ী, গাছগুলোর বাজারমূল্য অর্ধ কোটি টাকার বেশি। অথচ বিক্রি করা হয়েছে মাত্র ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়- যা বাজারমূল্যের তিন ভাগের এক ভাগ।
ঠিকাদার চান সওদাগর বলেন, আমাদের ম্যানেজারকে ধাক্কা দিয়ে দরপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমরা পুনরায় নিলামের দাবি জানিয়েছি, না হলে থানায় অভিযোগ করব।
অভিযুক্ত আল মামুন রাব্বুল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার লাইসেন্স সর্বোচ্চ দর দিয়েছে। আমি কাউকে বাধা দিইনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. জাওয়াদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে সেকশন অফিসার রেজাউল উদ্দিন জানিয়েছেন, দরপত্রে বাধা দেওয়ার বিষয়ে কয়েকজন ঠিকাদারের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখবে
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: