দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, “বিগত সরকারের পতনের অন্যতম কারণ ছিল দুর্নীতি। নির্বাচনের আগে মনোনয়ন বাণিজ্য ও অবৈধ টাকার লেনদেন বেড়ে যায়। এজন্য এখনই সতর্ক হতে হবে।”
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাহিত্য মঞ্চে অনুষ্ঠিত দুদকের গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘সবাই মিলে গড়বো দেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই গণশুনানির আয়োজন করে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঝিনাইদহ। সহযোগিতা করে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন দুদকের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক জালাল উদ্দীন আহম্মদ।
গণশুনানিতে ৯৫টি অভিযোগের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে ৩৩টি নিষ্পত্তি, ৭টি খারিজ এবং বাকি অভিযোগগুলো জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়।
শুনানিতে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মহসিন আলী ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাসসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে দুদক চেয়ারম্যান সতর্ক করেন।
এছাড়া বিআরটিএ, রেজিস্ট্রার অফিস, খাদ্য বিভাগ, ওজোপাডিকো, বিএডিসি ও পৌরসভার প্রকল্পে অনিয়ম ও দালালচক্রের অভিযোগও তোলা হয়। কিছু অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে যাচাইয়ের নির্দেশ দেন দুদক চেয়ারম্যান।
ড. আবদুল মোমেন বলেন, “চুয়াডাঙ্গায় গণশুনানিতে পাওয়া অভিযোগগুলো আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের অংশগ্রহণই আমাদের মূল লক্ষ্য। যেখানে অনিয়ম, সেখানেই দুদক — কেউ ছাড় পাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধেও দুদকের অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা চলছে। অনেক দুর্নীতিবাজ আসামি দেশ ছেড়েছেন, কেউ কেউ সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে গেছেন।”
গণশুনানিতে দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী, মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন, খুলনা বিভাগীয় পরিচালক জালাল আহমেদ, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জামাল আল নাসেরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: