[email protected] সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

দীর্ঘ ৯ মাস পর পর্যটকদের জন্য খুলছে সেন্ট মার্টিন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৭

ফাইল ছবি

দীর্ঘ নয় মাস পর আবারও খুলে যাচ্ছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। আগামী শনিবার (১ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে মৌসুমের প্রথম পর্যটক ভ্রমণ। তবে এবার দ্বীপে রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকছে না—পর্যটকদের দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসতে হবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, এই মৌসুমে পর্যটকদের দ্বীপে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হবে। এই স্বল্প সময়েও ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যেতে আশাবাদী দ্বীপের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে সীমিত আকারে রাত্রিযাপনের সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে, যেখানে অনধিক দুই হাজার পর্যটক থাকতে পারবেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অপর্যাপ্ত জেটির কারণে পর্যটকদের ভোগান্তিতে পড়তে হতে পারে। তাই আগের ব্যবহৃত জেটিটি পুনরায় চালুর দাবি তুলেছেন তারা। বর্তমানে দ্বীপের একমাত্র জেটির সংস্কারকাজ এখনো শেষ হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, “সরকারি নির্দেশনা অনুসারে ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটক জাহাজ চলাচল শুরু হবে। কক্সবাজারের দিক থেকে জাহাজ চলাচলের পয়েন্ট হিসেবে বিআইডব্লিউটিএ ঘাট নির্ধারণ করা হয়েছে।”

এবারও পর্যটকবাহী নৌযানগুলো কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে ছাড়বে। তবে ঘাট নির্বাচনে বিভিন্ন মহলের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

১২ দফা সরকারি নির্দেশনা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণকারীদের জন্য ১২টি নির্দেশনা দিয়েছে—

১. বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না।
২. পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টাল থেকে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে।
৩. প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে—কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল বলে গণ্য হবে।
৪. ফেব্রুয়ারিতে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
৫. প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন।
৬. সৈকতে রাতে আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দ করা বা বারবিকিউ পার্টি আয়োজন নিষিদ্ধ।
৭. কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রয় নিষিদ্ধ।
৮. সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
৯. সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ কোনো মোটরচালিত যানবাহন চলবে না।
১০. পলিথিন বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
১১. একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান বা শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
১২. পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

দীর্ঘদিন পর পর্যটন মৌসুম শুরু হওয়ায় সেন্ট মার্টিনের ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎসাহ ফিরে এসেছে। তবে রাত্রিযাপনের নিষেধাজ্ঞা ও স্বল্প সময়ের অবস্থান সীমাবদ্ধতা তাদের ব্যবসায়িক উদ্বেগও বাড়িয়েছে।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর