ভারতে আবারও বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩০৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। একই সময়ে মারা গেছেন ছয়জন। ফলে চলতি বছরে দেশটিতে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৪ জনে। বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১২১ জনে।
মৃতদের মধ্যে তিনজন কেরালার, দুজন কর্ণাটকের এবং একজন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। জানা গেছে, মৃতদের মধ্যে একজন ৪৩ বছর বয়সী পুরুষ যিনি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় দুর্বল ছিলেন। অন্যরা সবাই বয়স্ক এবং আগে থেকেই শ্বাসযন্ত্র ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় আক্রান্ত ছিলেন।
দক্ষিণ ভারতের রাজ্য কেরালায় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রোগী রয়েছে—মোট ২ হাজার ২২৩ জন। এখানেই সর্বোচ্চ ১৭০টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। গুজরাটে নতুন করে ১১৪টি সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, সেখানে মোট সক্রিয় রোগী ১ হাজার ২২৩ জন। দিল্লিতে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫৭ জনে।
চিকিৎসকদের মতে, এলএফ.৭, এক্সএফজি, জেএন.১ এবং নতুন এনবি.১.৮.১ ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ফলে এই নতুন প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাধারণ জনগণের জন্য এখনই নতুন করে বুস্টার ডোজ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং বয়স্ক, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাহীন এবং দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাদান কার্যক্রম চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
তাদের মতে, বেশিরভাগ মানুষের শরীরে ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন ও পূর্ব সংক্রমণের মাধ্যমে একটি ‘হাইব্রিড ইমিউনিটি’ তৈরি হয়েছে, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট।
এই সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছেন, কোভিড ও অন্যান্য মৌসুমি ভাইরাসজনিত জ্বরের উপসর্গ প্রায় একই রকম হওয়ায় রোগ নির্ণয়ে সচেতনতা জরুরি। জ্বর, ক্লান্তি বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলে তা হালকাভাবে না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
ভারতীয় মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষ করে বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তারা আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন, মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, ভিড় এড়ানো এবং উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এখনো অতীব জরুরি।
সূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: