[email protected] সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’, অন্ধ্রপ্রদেশে আছড়ে পড়তে পারে মঙ্গলবার

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:১০

ফাইল ছবি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা বা রাতের দিকে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলবর্তী এলাকা কাকিনাড়া–কলিঙ্গপত্তনমের মাঝামাঝি অঞ্চলে এটি আছড়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর।

বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণ-পশ্চিম ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এটি বিশাখাপত্তনম থেকে ৫৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে এবং চেন্নাই থেকে ৫০০ কিলোমিটার পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের সর্বোচ্চ বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।

অন্ধ্রপ্রদেশে ইতোমধ্যে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজ্যের সাতটি জেলায় লাল সতর্কতা (রেড অ্যালার্ট) ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আগামী তিন দিন (সোম-মঙ্গলবার-বুধবার) রাজ্যের সব স্কুল, কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কায় সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমুদ্রে মাছ ধরা, নৌযান চলাচল ও সৈকত পর্যটনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব ও ইস্ট কোস্ট রেলের বিভিন্ন রুটে বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।

রাজ্যজুড়ে ৪০০টির বেশি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে, যার মধ্যে শুধু এনটিআর জেলাতেই ১১৮টি শিবির চালু করা হয়েছে। ভূমিধস প্রবণ এলাকা থেকে মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডু সোমবার এক জরুরি বৈঠক করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফোনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ওড়িশা, তেলেঙ্গানা ও চেন্নাইসহ দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া শুরু হয়েছে। ওড়িশার গজপতি জেলায় ইতোমধ্যে প্রবল বর্ষণ হচ্ছে। ভূমিধস প্রবণ এলাকা থেকে মানুষদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

তামিলনাড়ুর উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিন জানিয়েছেন, মন্থার বড় কোনো প্রভাব রাজ্যে পড়বে না, কারণ এটি অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তবে উত্তর চেন্নাই, তিরুভাল্লুর, কাঞ্চীপুরমসহ কয়েকটি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের আঞ্চলিক অধিকর্তা হাবিবুর রহমান বিশ্বাস জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইবে।
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং ও জলপাইগুড়িতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।

নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা ও ভূমিধসের আশঙ্কা থাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কলকাতায়ও মঙ্গলবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে; বুধবার ও বৃহস্পতিবার বজ্রসহ হালকা বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইতে পারে।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর