[email protected] শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাংলাদেশ-জাপান ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই: অর্থনীতি ও বিনিয়োগে নতুন অধ্যায়

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৫, ১৪:০২

সংগৃহিত ছবি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ওপর ছয়টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। শুক্রবার টোকিওতে “বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার” উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এই চুক্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন (জেবিআইসি) এবং বাংলাদেশের শক্তি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক একটি চুক্তি, যা শক্তি খাতে যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। দ্বিতীয় চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় অনোডা ইনক এবং বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন (বিএসইজেড) লিমিটেডের মধ্যে। অনোডা বিএসইজেড-এ গ্যাস মিটার উৎপাদনের কারখানা স্থাপন, পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ পরিচালনা করবে।

তৃতীয় সমঝোতা স্মারকে বিএসইজেড এবং বাংলাদেশের নক্সিস কোং লিমিটেডের মধ্যে একটি জমি লিজ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মাধ্যমে পোশাক শিল্পের আনুষঙ্গিক উপকরণ তৈরির কারখানা স্থাপন করা হবে। চতুর্থ চুক্তিতে গ্লেফিট ও মুসাসি সিমিতসু ইন্ডাস্ট্রি এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিআইডিএ) ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত সাইকেল তৈরির কারখানা স্থাপনে সম্মত হয়।

পঞ্চম চুক্তিতে তথ্য নিরাপত্তা খাতে কাজ করা জাপানি প্রতিষ্ঠান সিফার কোর কোং লিমিটেড বাংলাদেশে ২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি কোয়ান্টাম প্রযুক্তি নির্ভর জাতীয় পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক ডিজিটাল অর্থনীতিতে রূপান্তরের লক্ষ্য নিয়েছে।

ষষ্ঠ ও শেষ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং বিআইডিএর মধ্যে। এই চুক্তির মাধ্যমে ‘ইন্টিগ্রেটেড সিঙ্গেল উইন্ডো প্ল্যাটফর্ম (আইএসডব্লিউপি)’ বাস্তবায়নে জাইকা প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে। এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিভিন্ন ওয়ান-স্টপ সেবা একত্রিত করার একটি উদ্যোগ।

স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “এখন বাস্তবায়ন করা আমাদের কাজ। আমি সরে গেছি।” তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে দেশে ক্রমাগত ‘ভূমিকম্প’ হয়েছে, কিছুই স্থিতিশীল ছিল না। এমন এক পরিস্থিতিতে জাপান বন্ধু হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি জাপানকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “আমি এখানে এসেছি ধন্যবাদ জানাতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ ডিজাইন করতে।”

এই সময় তিনি চ্যালেঞ্জকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “আমরা ইতিহাসকে দেখাতে চাই যে এটা করা হয়েছে—নিখুঁতভাবে। এটা শুধু ব্যবসা নয়, মানুষের জীবন বদলের বিষয়।” তিনি সকল অংশীদারকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প (এমইটিআই) মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী শিনজি টেকুচি। তিনি জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩০০-রও বেশি জাপানি কোম্পানি কাজ করছে, যা ১০ বছর আগের তুলনায় তিন গুণ বেশি। অনুষ্ঠানে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) এর চেয়ারম্যান নরিহিকো ইশিগুরো এবং জাপান-বাংলাদেশ কমার্শিয়াল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন কমিটির শীর্ষ কর্মকর্তারাও বক্তব্য রাখেন।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর