জুলাই ঘোষণাপত্র দেবে সরকার, কোনো ব্যক্তি বা দল নয়: জুলাই ঐক্য

জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত আয়োজিত ‘মার্চ ফর জুলাই রিভাইভস’ কর্মসূচির সমাপনীতে বক্তারা বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ বর্তমান সরকারকেই দিতে হবে— কোনো ব্যক্তি বা দল নয়। মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এই সমাবেশে এ কথা বলেন জুলাই ঐক্য প্ল্যাটফর্মের নেতারা।

জুলাই ঐক্যের সংগঠক এবি জুবায়ের বলেন, ১১ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো আমরা জুলাই সনদ হাতে পাইনি। কোনো একক দল বা ব্যক্তি এটি দেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। বর্তমান সরকারকেই এটি দিতে হবে। যদি সরকার ব্যর্থ হয়, তাহলে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত। তা না হলে ছাত্রজনতা তা আদায় করে নেবে। তিনি আরও বলেন, যদি কোনো দল বা ব্যক্তি নিজেরা 'জুলাই ঘোষণাপত্র' দিতে চায়, ছাত্রসমাজ তা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করবে।

সংগঠক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, আমরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছি। এবার সময় হয়েছে সরকারকে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার— অবিলম্বে জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র দিন। নয়তো ৫০ বছর পর এই আন্দোলনকেই সন্ত্রাস বলে চালিয়ে দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। আমরা সেটি হতে দেব না।

সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে সংগঠক ইসরাফিল ফরাজী বলেন, ছাত্র উপদেষ্টারা মন্ত্রিসভায় থাকলেও তথ্য মন্ত্রণালয়ে কিংবা গণমাধ্যমে কোনো সংস্কার হয়নি। এনআরবি থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে ফ্যাসিবাদের দোসররা। এমনকি ৩২ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা পড়লেও সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এটা দ্বিচারিতা। আমরা বলছি— তাদের বিচার করুন, না হয় দায়মুক্তি দিন। নইলে ছাত্রজনতা নিজে থেকেই ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

সমাবেশ শেষে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ উপলক্ষে ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ। তিনি বলেন, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জুলাইজুড়ে আন্দোলনের ধারাকে আরও বেগবান করা হবে। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মার্চ, সম্মেলন, প্রতীকী কফিন মিছিল, শহীদদের কবর জিয়ারত, জুলাই শপথ পালন, তথ্যচিত্র প্রকাশ, ভিডিও প্রচার এবং ‘গণ-অভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশ দিবস’ উদযাপন।

উল্লেখ্য, জুলাই ঐক্য প্ল্যাটফর্ম ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ঘোষিত ঘোষণাপত্র ও সনদের বাস্তবায়নের দাবিতে দেশজুড়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। এবারের সমাবেশে তারা সরকারের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে— অবিলম্বে সনদ দিতে হবে, না হলে ছাত্রজনতা তা আদায় করে নেবে।