ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিন দিন ধরে দেশ কার্যত সরকারবিহীন অবস্থায় ছিল। এরপর ৮ আগস্ট ড. ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।
এক বছর পূর্তিতে ৫ আগস্ট ‘গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ উপস্থাপন করেন। একই দিনে তিনি জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।
ড. ইউনূস বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি পাঠাবো, যাতে নির্বাচন কমিশন রমজানের আগেই, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়।”
পরদিন ৬ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠানো হয়, যার মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের সরকারি অনুরোধ প্রক্রিয়াগতভাবে সম্পন্ন হয়।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ঘোষণা করা হবে।
একাধিক সংস্কার কমিশন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি
অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে:
নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন
পুলিশ সংস্কার কমিশন
বিচারব্যবস্থা সংস্কার কমিশন
দুর্নীতি দমন কমিশন
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন
স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম ও শ্রমিক অধিকার কমিশন
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন
এই কমিশনগুলো ইতিমধ্যে সুপারিশ জমা দিয়েছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে অনেক ক্ষেত্রেই তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়ে ড. ইউনূস জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ২০২৫ সালের জুনে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ৮.৪৮ শতাংশে, যা গত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে জুলাইয়ে তা কিছুটা বেড়ে ৮.৫৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।
ড. ইউনূস আরও জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের আস্থার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্থিতিশীলতা ফিরেছে এবং গত ১১ মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার সুদ ও মূলধন পরিশোধ করা হয়েছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: