[email protected] রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
২৯ আষাঢ় ১৪৩২

চাঁদাবাজদের দখলে দেশ, জাতি আতঙ্কিত: খেলাফত মজলিস

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০২৫, ২১:৩৪

সংগৃহিত ছবি

রাজধানীর মিটফোর্ডে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী মো. সোহাগকে হত্যার ঘটনার এবং দেশব্যাপী চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

শনিবার (১২ জুলাই) সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মাসিক বৈঠকে এসব বিষয়ের তীব্র নিন্দা জানান দলের নেতারা।

দলটির আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, “মিটফোর্ডে শত শত মানুষের সামনে একজন ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এটি কোনো একক অপরাধ নয়, বরং বিচারহীনতার ভয়াবহ পরিণতি, যা জাতির জন্য লজ্জাজনক।”

তিনি অভিযোগ করেন, দেশের বাজার, পরিবহন ও নির্মাণ খাত এখন চাঁদাবাজদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে এই সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ চক্রের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। এমনকি আলেম-উলামারাও এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন।

নির্বাচন ব্যবস্থায় সংস্কার চেয়ে মাওলানা মামুনুল বলেন, “সংসদের নিম্নকক্ষে আংশিক এবং উচ্চকক্ষে পূর্ণ পেয়ার পদ্ধতি চালু করলে রাজনীতি থেকে দুর্বৃত্তদের উৎপাত কমবে এবং নির্বাচনী সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।”

বৈঠকে নেতারা বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত অংশ চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে, ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

এ সময় জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যালয় স্থাপনের উদ্যোগের বিরোধিতা জানায় খেলাফত মজলিস। নেতারা বলেন, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং ইসলামী জীবনব্যবস্থা ও পারিবারিক কাঠামোর বিরুদ্ধে গ্লোবাল ইসলামবিরোধী এজেন্ডার অংশ।

তারা ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে এই গ্লোবাল এজেন্ডার অন্যতম বাহক হিসেবে উল্লেখ করেন। নেতারা দাবি করেন, ইউনুসের উপদেষ্টারা দীর্ঘদিন ধরে ইসলামী শরিয়াহ ও সামাজিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আসছেন।

বক্তারা বলেন, এই তথাকথিত মানবাধিকার অফিস ইতোমধ্যে বহু মুসলিম দেশে ইসলামী শিক্ষা ও সামাজিক শালীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে। এটি ধর্মনিরপেক্ষতা ও যৌন বিচ্যুতি চাপিয়ে দেওয়ার একটি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।

নেতারা বলেন, “বাংলাদেশ একটি ঈমানি চেতনায় প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন রাষ্ট্র। ১৯৪৭, ১৯৭১, ২০১৩ ও ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান প্রমাণ করে যে এই জাতি ইসলাম, স্বাধীনতা ও আত্মমর্যাদার প্রশ্নে কখনো আপস করেনি। কিন্তু আজ সেই স্বকীয়তার ওপর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।”

তারা আরও বলেন, “জাতীয় স্বার্থ, ধর্মীয় স্বকীয়তা ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার প্রশ্নে কোনো আপস নয়—এই অবস্থান থেকে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে ইনশাআল্লাহ।”

দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা আফজালুর রহমান, মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা আব্দুল আজিজ, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, মুফতি শরাফত হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলালসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর