[email protected] সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫
২১ আশ্বিন ১৪৩২

গণভোট ও পিআর দাবিতে জাতি আবারও বিভক্ত হচ্ছে: সালাহউদ্দিন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৫৬

‘আগামী নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করার চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সালাহউদ্দিন আহমদ (সংগৃহিত ছবি)

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের আগে গণভোট ও প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) দাবিকে জাতিকে বিভক্ত করার প্রচেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, “নির্বাচনের আগে গণভোট ও পিআরের দাবিতে জাতিকে বিভক্ত করা হচ্ছে, তা মোকাবিলাই নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ।”

সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আগামী নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করার চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। নাগরিক যুব ঐক্য এ সভার আয়োজন করে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জনগণের রায় নেওয়ার বিষয়ে সবাই প্রায় একমত। তবে কেউ কেউ আগে গণভোটের দাবি তুলছে, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টা। তিনি আরও বলেন, গণভোট যারা জটিল করতে চাচ্ছে, আল্লাহ তাদের হেদায়েত দিন। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার প্রয়াস প্রতিহত করতে হবে। জনগণ সুষ্ঠু ভোটের জন্য মুখিয়ে আছে, কেউ অনিয়ম করতে চাইলে জনগণই প্রতিহত করবে। এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা গৌণ হবে।

রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিষয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা ভবিষ্যতের জন্য ভয়ংকর হবে। এটি বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হওয়া উচিত। তিনি আরও যোগ করেন, জনগণ ৫ আগস্ট জানিয়ে দিয়েছে—দেশে ফ্যাসিবাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছে। তবে আন্তর্জাতিক বৈধতার জন্য এটি বিচারিক প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশে নির্বাচন হবে কি হবে না—এই প্রশ্ন করার পরিবেশ নেই, নির্বাচন হবেই। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ হলো নির্বাচন। শ্রীলঙ্কা ও নেপাল সংস্কারের পথে হাঁটেনি, তাই তাদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে; কিন্তু আমরা সংস্কারের পথে হেঁটে ঝামেলা বাড়িয়ে ফেলেছি। তিনি বলেন, ৮৬টি সংস্কার বাস্তবায়িত হলেও সেখানে পিআর অন্তর্ভুক্ত ছিল না। সংস্কার কমিশনে পিআর নিয়ে আলোচনা হয়নি, বরং নতুনভাবে গণভোট যুক্ত করা হয়েছে।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, নাহিদ ইসলাম (এনসিপি আহ্বায়ক) যাদের ওপর বিশ্বাস রেখেছেন, তারা জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। উপদেষ্টারা গণঅভ্যুত্থানের কিছুই বোঝে না। তিনি বলেন, নিম্নকক্ষে পিআর বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পিআর নিয়ে আন্দোলন ফ্যাসিবাদকে সুযোগ করে দিচ্ছে। বিভাজন নিয়ে নির্বাচনে গেলে তা আওয়ামী লীগ ও ভারতের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন জোট গঠনের তোড়জোড় চলছে। ইসলামী দলগুলো একসঙ্গে ভোট নিতে চায়, কিন্তু বিভেদও আছে। বামপন্থী ও মধ্যপন্থীরাও জোট করার চেষ্টা করছে। তিনি মনে করেন, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হলেও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ঝামেলা মোকাবিলায় পুলিশের সক্ষমতা সীমিত। আওয়ামী লীগ ও হিন্দু ভোট নিয়ে টানাটানি চলছে। বিএনপি-জামায়াতের মধ্যেও সংঘাত বাড়তে পারে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে পরে আর নির্বাচন সম্ভব হবে না।

আলোচনা সভার আয়োজন করে নাগরিক যুব ঐক্য। সভায় বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর বিভেদ, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিলম্ব এবং গণভোট আয়োজনের বিতর্ক আসন্ন নির্বাচনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর