ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৪ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে রাবি সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা হলো একটা সার্বজনীন বিষয়। বিপ্লব পরবর্তী সময়ে বার বার বলার পরও বর্তমান সরকার দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পারেনি।
আমরা বার বার প্যারিস রোডে দাঁড়িয়েছি এবং দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা সময়ে এই নিরাপত্তা জোরদারের জন্য আন্দোলন মানববন্ধন হয়েছে কিন্তু এ সরকার এ জায়গায় বার বার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। যখন একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে দাড়াচ্ছে তাদের গায়ে পানি ছোড়া হচ্ছে। আবার যখন কোনো অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে নামা হচ্ছে পুলিশ দ্বারা নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে।
তাই সরকারকে এ ধরনের আচরণ বন্ধ করতে হবে এবং রাষ্ট্রকে প্রতিটি নাগরিকের জন্য সমান হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যখন একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারা যাবে তার জন্য যেমন ২৪ ঘন্টার মধ্যে যারা দোষী তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন যখন হত্যার শিকার হবে তখন সেটি চাপা পড়ে যাবে এমন রাষ্ট্র আমরা চায় না। এ দেশের প্রতিটি নাগরিককে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব এই রাষ্ট্রের।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার আরেক সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে ২য় বারের মতো ক্যাম্পাসে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে। ইতোপুর্বে পারভেজ ভাইকে আমরা হারিয়েছি এবং গতকাল সাম্য ভাইকে বহিরাগতরা কুপিয়ে হত্যা করে তার নিজের ক্যাম্পাসে। এর দায় কোনোভাবে ইন্টেরিম সরকার এড়াতে পারে না।
আমাদের ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুথানের মধ্যে দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশের সপ্ন দেখেছি তার এক অন্যতম কাণ্ডারি ছিল শাহরিয়ার আলম সাম্য ভাই। যেই সাম্য ভাইয়ের ঘটনা ঢাবিতে ঘটেছে সেই ঘটনা যে রাবিতে হবেনা তার কোনো নিশ্চয়তা নাই।
তিনি আরো বলেন, একজন ছাত্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনগুলোর এই বিষয়ে কোনো মাথাব্যাথা নেই। আমরা অনতিবিলম্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালসহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতের প্রবেশ নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি এবং ইন্টেরিমের কাছে দেশের নিরাপত্তার কঠোর দাবি জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, শাহরিয়ার সাম্য হত্যার ঘটনার রেশ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ দেশজুড়ে শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে ছাত্রসমাজের উদ্বেগেরই প্রতিফলন।
আলোকিত গৌড়/এম.আর
মন্তব্য করুন: