[email protected] সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ত্যাগী সাহাবি সালিম (রা.): দাসত্ব থেকে ইসলামের মর্যাদার মসনদে

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:১৫

ফাইল ছবি

ইসলামের শুরুযুগের এক বিশিষ্ট সাহাবি ছিলেন সালিম (রা.)। ইরানি বংশোদ্ভূত এই সাহাবির উপনাম ছিল আবু আবদুল্লাহ। পিতার নাম উবাইদ ইবনে রাবিআহ (মতান্তরে মাক্বিল)। পারস্যের ইসতাখার অঞ্চলে তাঁর পূর্বপুরুষদের বসবাস ছিল বলে জানা যায়।

সালিম (রা.) প্রথমে সুবাইতা আল-আনসারিয়া (রা.)-এর দাস হিসেবে মদিনায় আসেন। পরে সুবাইতা তাঁকে মুক্ত করে দেন, এবং তাঁর স্বামী আবু হুযাইফা (রা.) তাঁকে দত্তক গ্রহণ করেন। এরপর থেকেই তিনি পরিচিত হন “সালিম ইবনে আবু হুযাইফা” নামে। তবে পরবর্তীতে পালকপুত্র-প্রথা বাতিল হলে তিনি “মাওলা আবি হুযাইফা” নামে পরিচিত হন।

ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত

সালিম (রা.) তাঁর অভিভাবক আবু হুযাইফা (রা.)-এর সঙ্গে ইসলামের সূচনালগ্নেই ইসলাম গ্রহণ করেন। মক্কার কাফিরদের নৃশংস নির্যাতনের শিকার হলেও দ্বীনের পথে অবিচল থাকেন। পরে নবী করিম (সা.)-এর আগেই তাঁরা মদিনায় হিজরত করেন।

দাসত্ব থেকে মর্যাদায়

একজন সাধারণ দাস হয়েও সালিম (রা.) ইসলামী জ্ঞানে, চরিত্রে ও নেতৃত্বে ছিলেন অসাধারণ। হযরত উমর (রা.) তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেন,

“আজ যদি সালিম জীবিত থাকত, আমি কোনো পরামর্শ ছাড়াই খেলাফতের দায়িত্ব তার হাতে তুলে দিতাম।”
এ কথাই তাঁর মর্যাদা ও প্রজ্ঞার প্রমাণ বহন করে।

কিরাত ও তিলাওয়াতে খ্যাতি

সালিম (রা.) ছিলেন বিশুদ্ধ কোরআন পাঠে দক্ষ ও সুমধুর কণ্ঠের অধিকারী। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বয়ং সাহাবিদের নির্দেশ দিয়েছিলেন চারজনের কাছ থেকে কোরআন শেখার, তাঁদের একজন ছিলেন সালিম (রা.)। নবীজির হিজরতের পূর্বে মসজিদে কুবায় ইমামতি করতেন তিনি। এমনকি আবু বকর (রা.) ও উমর (রা.) তাঁর পেছনে নামাজ আদায় করেছেন।

জিহাদে অংশগ্রহণ ও শাহাদাত

সালিম (রা.) বদর, উহুদ, খন্দকসহ নবীজির সব যুদ্ধেই অংশ নেন। খলিফা আবু বকর (রা.)-এর আমলে ১২ হিজরি সনে ইয়ামামার যুদ্ধে মুরতাদদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে শাহাদাত বরণ করেন। একই যুদ্ধে তাঁর প্রিয় সঙ্গী ও অভিভাবক আবু হুযাইফা (রা.)-ও শহিদ হন।

একসঙ্গে ইসলাম গ্রহণ, একসঙ্গে হিজরত এবং শেষ পর্যন্ত একসঙ্গে শাহাদাত—এই ত্যাগী যুগল সাহাবির নাম ইতিহাসে চিরঅম্লান হয়ে আছে।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর