আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সফলতা ও স্থিতিশীলতার জন্য যে গুণগুলোর প্রয়োজন, তার মধ্যে সবর বা ধৈর্য অন্যতম। এটি এমন এক সম্পদ, যা মানুষকে সংকটেও দৃঢ় রাখে এবং সঠিক পথে চলতে সহায়তা করে।
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধৈর্যের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন— “ধৈর্যের চেয়ে উত্তম ও বড় কোনো সম্পদ কাউকে দেওয়া হয়নি।” (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)।
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি ধৈর্য অর্জন করেছে, সে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ অর্জন করেছে।
জীবনের প্রতিটি বাঁকে, প্রতিটি পরীক্ষার মুহূর্তে ধৈর্যই আমাদের এগিয়ে রাখে। পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক আচরণ কিংবা কর্মজীবনের নানা প্রতিকূলতায় ধৈর্য একজন মানুষকে বিচলিত হতে দেয় না, বরং শান্ত ও স্থির রাখে।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন— “ধৈর্য হলো আলো।” (সহিহ মুসলিম)।
আলো যেমন অন্ধকার দূর করে, তেমনি ধৈর্য জীবনের অন্ধকারকে দূর করে সাফল্যের পথ আলোকিত করে।
ধৈর্যের বিনিময়ে আল্লাহর ভালোবাসা:
পবিত্র কোরআনে একাধিক স্থানে আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীলদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন—
“আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন”,
“আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন” এবং
“ধৈর্যশীলদের জান্নাতের সুসংবাদ দাও।”
ধৈর্য মানুষকে করে শক্তিশালী:
সমাজে অনেক সময় ধৈর্যশীল মানুষকে দুর্বল ভাবা হয়, কিন্তু হাদিস অনুযায়ী প্রকৃত শক্তিশালী সেই ব্যক্তি, যে রাগের সময়ও নিজেকে সংযত রাখতে পারে। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন—
“সে শক্তিশালী নয় যে রাগের মাথায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়, বরং প্রকৃত শক্তিশালী সেই ব্যক্তি যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।” (সহিহ বুখারি: ৬১১৪)
ধৈর্য নিরাপত্তা দেয়:
কোরআনের সুরা আসরে বলা হয়েছে—
“মহাকালের শপথ! মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তারা নয়, যারা ইমান আনে, সৎ কাজ করে, এবং পরস্পরকে সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ দেয়।” (সুরা আসর: ১-৩)
অর্থাৎ, যারা ধৈর্যশীল ও সত্যনিষ্ঠ, তারা সমাজে নিরাপদ থাকে এবং আল্লাহর সাহায্য লাভ করে।
ধৈর্য তাই শুধু এক মানসিক গুণ নয়—এটি জীবনের দিকনির্দেশনা, শক্তি এবং নিরাপত্তার উৎস।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: