ফিকহের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হলো—কোনো অন্যায় কাজ বা লেনদেন যদি একজনের জন্য হারাম হয়, তবে অপর পক্ষের জন্যও তা হারাম। ইসলাম শুধু অন্যায়কেই নিষিদ্ধ করেনি, বরং অন্যায়ে সহযোগিতাকেও গুনাহ হিসেবে গণ্য করেছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, “তোমরা পাপ ও সীমা লঙ্ঘনের কাজে একে অপরকে সহায়তা কোরো না; আল্লাহকে ভয় করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।”
(আল-কুরআন, সূরা মায়িদা ৫:২)
যেমন—সুদ নেওয়া যেমন হারাম, তেমনি সুদ দেওয়াও হারাম। রাসুলুল্লাহ (সা.) সুদখোর, সুদদাতা, সুদলিপিকার ও সাক্ষীদের ওপর অভিশাপ দিয়েছেন এবং বলেছেন—“এরা সবাই সমান।” (সহিহ মুসলিম: ১৫৯৮)
একইভাবে ঘুষ নেওয়া যেমন গুনাহ, ঘুষ দেওয়াও গুনাহ। মদ, জুয়া বা অন্য কোনো হারাম পণ্যের বিক্রেতা যেমন পাপ করে, ক্রেতাও তাতে অংশীদার হয়।
ইসলাম চায় এমন এক ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও অর্থনীতি, যেখানে সততা, ন্যায়বিচার ও হালাল উপার্জন প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই প্রতিটি লেনদেনে এই নীতি মনে রাখা জরুরি—যা নেওয়া হারাম, তা দেওয়াও হারাম।
ইসলামী ব্যাংকিং এই নীতিকেই বাস্তবে রূপ দিচ্ছে। এখানে সুদভিত্তিক লেনদেনের পরিবর্তে লাভ-ক্ষতির ভাগাভাগি (মুশারাকা, মুদারাবা) ও পণ্যভিত্তিক বাণিজ্যের (মুরাবাহা, ইজারা) মাধ্যমে ন্যায়সংগত আর্থিক সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়। ফলে কেউ অন্যায়ভাবে লাভবান হয় না, আবার কেউ ক্ষতির দায় থেকেও মুক্ত থাকে না।
এইভাবে ইসলামী অর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করছে ন্যায়, ভারসাম্য ও পারস্পরিক দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে এক টেকসই অর্থনৈতিক নিরাপত্তা।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: