রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের অন্যতম উজ্জ্বল বৈশিষ্ট্য ছিল দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত জীবনযাপন ও দ্বীনের জন্য সীমাহীন আত্মত্যাগ। জীবনভর বিজয়ের পর বিজয় অর্জন করলেও তিনি কখনো পার্থিব সম্পদকে গুরুত্ব দেননি।
ইন্তেকালের আগে পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণের জন্য তিনি নিজের বর্ম এক ইহুদির কাছে বন্ধক রেখে অর্থ নিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেই বর্ম মুক্ত করতে সক্ষম হননি। এর পেছনে কারণ ছিল তাঁর সংযম, বদান্যতা ও পরম আত্মত্যাগ।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো পরপর তিন দিন পেট ভরে গমের রুটি খেতে পারেননি। তিনি কোনো দিরহাম, দিনার, বকরি বা উট রেখে যাননি। অন্য বর্ণনায় পাওয়া যায়, ইন্তেকালের সময় ঘরে মাত্র আধা সের যব ছাড়া আর কিছুই ছিল না।
আমর ইবনুল হারিস (রা.) জানান, রাসুলুল্লাহ (সা.) শুধু যুদ্ধের কিছু হাতিয়ার, একটি গাধা ও অল্প কিছু জমি রেখে যান, যা পরে সদকা হিসেবে গণ্য হয়।
মহানবী (সা.)-কে একবার বলা হয়েছিল মক্কার বাতহা উপত্যকা স্বর্ণে পরিণত করে দেওয়া হবে। তিনি উত্তরে বলেন, তিনি চান একদিন ক্ষুধার্ত থাকবেন আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি ও দোয়া করার জন্য; আর যেদিন আহার করবেন, সেদিন আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে পারবেন।
হজরত আয়েশা (রা.) আরও বলেন, মাসের পর মাস তাদের ঘরে আগুন জ্বলত না। শুধু খেজুর ও পানি দিয়ে দিন পার হতো। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর পবিত্র পরিবার অনেক সময় অভুক্ত অবস্থায় রাত কাটাতেন।
খেজুর পাতার চাটাইয়ের ওপর শয়ন করতে গিয়ে নবীজির (সা.) পিঠে চিহ্ন পড়ে যেত— এমন সরল জীবনই ছিল তাঁর পছন্দ।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: