মানুষকে সীমিত সময়ের জন্য দুনিয়ায় পাঠানো হয়েছে—এই সময়েই তাকে অনন্ত পরকালের প্রস্তুতি নিতে হয়। তাই মুমিনের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান। তবে কিছু বিশেষ সময় রয়েছে, যেগুলোর গুরুত্ব আল্লাহ তাআলা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। এসব মুহূর্তে ইবাদত ও দোয়া বেশি কবুল হওয়ার আশা করা যায়।
রাতের শেষ ভাগ
ইবাদত ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম সেরা সময় হলো রাতের শেষ অংশ। এ সময় আল্লাহ বান্দাকে ডাকেন এবং দোয়া কবুল করেন। হাদিসে এসেছে—রাতের শেষ ভাগে আল্লাহ তাঁর বান্দার সবচেয়ে নিকটবর্তী হন (বুখারি, হাদিস: ১১৪৫)।
সকাল-সন্ধ্যার সময়
কোরআনে বলা হয়েছে, দাউদ (আ.)-এর সঙ্গে পর্বত ও পক্ষীকুল সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহকে স্মরণ করত (সুরা সদ ১৮-১৯)। পুরো সৃষ্টিজগত এই সময়ে তাসবিহে ব্যস্ত থাকে—তাই মুমিনের জন্য এটিও অত্যন্ত গুরুত্বের সময়।
দৈনিক আমল পেশ হাওয়ার সময়
হাদিসে বর্ণিত, দিনের শেষের আগে রাতের আমল এবং রাতের শেষে দিনের আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। আল্লাহর পর্দা হলো জ্যোতি এবং তিনি কখনো নিদ্রিত হন না (মুসলিম, হাদিস: ২৯৩)।
সিজদার সময়
সিজদা হলো আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী হওয়ার মুহূর্ত। তাই এ অবস্থায় দোয়া বেশি বেশি করতে নির্দেশ দিয়েছেন নবী করিম (সা.) (মুসলিম, হাদিস: ৪৮২)।
আজানের সময়
আজান শুরু হলে আসমানের দুয়ার খুলে যায় এবং দোয়া কবুল হয়। তাই এই সময়টিও মুমিনের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ (মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদিস: ১৮৮৪)।
আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়
এই সময় দোয়া বিশেষভাবে কবুল হয় বলে হাদিসে উল্লেখ আছে (মেশকাত, হাদিস: ৬৭১)।
ইকামত, বৃষ্টি ও সৈন্য সমাবেশের সময়
এই তিন মুহূর্তেও দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বেশি। রাসুল (সা.) দোয়া কবুলের সুযোগ এই সময়গুলোতে খুঁজতে বলেছেন (বায়হাকি)।
জুমার দিনের শেষ ভাগ
জুমার দিনে ১২টি বিশেষ মুহূর্ত রয়েছে, যার একটি আসরের পর শেষ সময়ে—যখন দোয়া কবুল হয় (বুখারি, হাদিস: ৬০৩৭)।
এ ছাড়া ইফতারের সময়, লাইলাতুল কদরের রাত, আরাফার ময়দানে অবস্থান, ও কাবা ঘরের সামনে দোয়ার মুহূর্ত—এসবও মুমিনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে বিবেচিত।
ইসলামি শিক্ষায় উল্লেখিত এসব মুহূর্ত ইবাদত, দোয়া ও আত্মসংযমের বিশেষ সুযোগ এনে দেয়। মুমিনের উচিত এগুলো কাজে লাগিয়ে পরকালের জন্য উত্তম প্রস্তুতি নেওয়া।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: