বিশ্বের শীর্ষ দুই শতাংশ বিজ্ঞানীর তালিকায় টানা চতুর্থবার জায়গা করে নিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের সন্তান প্রফেসর ড. মো. সফিউর রহমান।
তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের রসায়ন বিভাগের প্রধান ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এলসেভিয়ার যৌথভাবে সম্প্রতি এই তালিকা প্রকাশ করেছে। স্কোপাস ইনডেক্সভুক্ত গবেষণা প্রবন্ধকে মানদণ্ড ধরে ২২টি বিষয় ও ১৭৬টি উপ-ক্ষেত্রে বিভাজন করে এই তালিকা তৈরি করা হয়।
এ অর্জন সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ড. সফিউর রহমান বলেন, “আমার দেশ আমাকে পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ দিয়েছে। তাই কানাডায় দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় পড়াশোনা ও শিক্ষকতার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সেখানে থেকে যাইনি। ২০১৪ সালে দেশে ফিরে এসে আবারও পরমাণু শক্তি কমিশনে যোগ দিই। আজ দেশের জন্য সামান্য হলেও অবদান রাখতে পারায় আমি আনন্দিত।”
পরমাণু শক্তি কমিশনে ফুল-টাইম দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে খণ্ডকালীন অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা করছেন। এ ছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১৫ সাল থেকে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার তত্ত্বাবধানে ইতোমধ্যে পাঁচজন গবেষক পিএইচডি এবং ৬৫ জন শিক্ষার্থী পোস্টগ্রাজুয়েট ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন।
বিজ্ঞানচর্চার পাশাপাশি তিনি লেখালেখিতেও সক্রিয়। এখন পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে তার আটটি বিজ্ঞানবিষয়ক বই। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ১৫০টির বেশি প্রবন্ধ। গবেষণা ও প্রশিক্ষণের কাজে তিনি আমেরিকা, কানাডা, জাপান, জার্মানি, চীনসহ নানা দেশে ভ্রমণ করেছেন। বিশেষ করে পানির মানোন্নয়ন, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তার কাজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শিবগঞ্জ বাজারের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ড. সফিউর রহমান। তার এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি শুধু জেলার মানুষের নয়, পুরো বাংলাদেশের জন্যই এক গর্বের বিষয়।
আলোকিত গৌড়/জে.আর
মন্তব্য করুন: