[email protected] সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে নতুন বিতর্ক

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:৪৬

ফাইল ছবি

দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করে আসছেন, মহাবিশ্ব দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে। এই ধারণার ভিত্তিতেই ২০১১ সালে কয়েকজন বিজ্ঞানী পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণা সেই প্রতিষ্ঠিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলছে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের গতি এখন ধীরে হচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়াং-উক লি’র নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ ঘটানো রহস্যময় শক্তি ‘ডার্ক এনার্জি’ সময়ের সঙ্গে দুর্বল হয়ে পড়ছে। ফলে এখন মহাবিশ্ব আর আগের মতো ত্বরান্বিতভাবে নয়, বরং ধীরগতিতে প্রসারিত হচ্ছে।

অধ্যাপক লি বলেন, “আমাদের পর্যবেক্ষণ ইঙ্গিত দিচ্ছে, ডার্ক এনার্জির প্রভাব আগের ধারণার তুলনায় দ্রুত বদলাচ্ছে। যদি এই ফলাফল নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়, তবে এটি মহাবিশ্ববিদ্যার ধারণায় বড় পরিবর্তন আনবে।”

এই গবেষণা ১৯৯০-এর দশকে পাওয়া তথাকথিত প্রমাণগুলোকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তখন দূরবর্তী সুপারনোভা পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছিলেন, তাদের আলো প্রত্যাশার তুলনায় ম্লান—যা থেকে ধারণা করা হয়েছিল, মহাবিশ্ব দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে।

কিন্তু নতুন গবেষণায় বলা হচ্ছে, প্রাচীন তারাগুলো থেকে গঠিত সুপারনোভাগুলোর আলো হয়তো স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা কম উজ্জ্বল ছিল। ৩০০টি গ্যালাক্সির তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা দেখেছেন, এই বিষয়টি বিবেচনায় নিলে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হার আসলে অনেকটা ধীর।

গবেষক দলটি সতর্ক করেছে, যদি ডার্ক এনার্জির শক্তি আরও কমে যায় বা ঋণাত্মক হয়ে পড়ে, তাহলে ভবিষ্যতে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ থেমে গিয়ে উল্টো দিকে সংকুচিত হতে পারে—যাকে বলা হয় ‘বিগ ক্রাঞ্চ’।

গবেষণাটি প্রকাশের পর বিশ্বজুড়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্লোস ফ্রেঙ্ক বলেন, “এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং আবিষ্কার। হয়তো এটি ভুলও হতে পারে, তবে একে অবহেলা করার সুযোগ নেই।”

গবেষণাটি এখনো যাচাই-বাছাইয়ের পর্যায়ে থাকলেও, এটি মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ ও ডার্ক এনার্জির প্রকৃতি নিয়ে নতুন করে ভাবনার পথ খুলে দিয়েছে।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর