বর্তমানে ইয়ারবাড আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। গান শোনা, অনলাইন ক্লাস, অফিস মিটিং কিংবা ফোনে কথা বলা—সব ক্ষেত্রেই ইয়ারবাডের ব্যবহার বেড়েছে বহুগুণ। তবে ছোট এই যন্ত্রটির ভুল ব্যবহার ও অপরিষ্কার রাখার অভ্যাস বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত পরিষ্কার না করলে ইয়ারবাডে ক্ষতিকর জীবাণু জমে যায়, যা কানে সংক্রমণ থেকে শুরু করে স্থায়ী শ্রবণশক্তি হ্রাসের কারণ হতে পারে। সামান্য অবহেলায় এমন ক্ষতি হতে পারে, যা অনেক সময় আর পুরোপুরি ঠিক হয় না।
ইয়ারবাড সরাসরি কানের ভেতরের স্পর্শকাতর অংশের সংস্পর্শে আসে। কানের ভেতরের ময়লা, ঘাম ও তেল ইয়ারবাডের জালে জমে থাকে। পাশাপাশি বাইরে বহনের সময় ধুলাবালি ও ব্যাকটেরিয়াও লেগে যায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, অপরিষ্কার ইয়ারবাডে স্ট্যাফাইলোকক্কাসসহ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জন্মাতে পারে, যা কানের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
দীর্ঘদিন নোংরা ইয়ারবাড ব্যবহারের ফলে কানে চুলকানি, ব্যথা, লালচে ভাব ও দুর্গন্ধযুক্ত তরল নিঃসরণের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এসব লক্ষণ উপেক্ষা করলে সংক্রমণ গভীরে ছড়িয়ে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে সাময়িক নয়, বরং স্থায়ী শ্রবণশক্তি হ্রাসের আশঙ্কাও তৈরি হয়।
এছাড়া অপরিষ্কার ইয়ারবাড কানের ভেতরে ইয়ারওয়াক্স আরও ভেতরে ঠেলে দেয়। এতে কানের নালী বন্ধ হয়ে শব্দ কম শোনা, মাথা ঘোরা বা কানে চাপ অনুভব করার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, শিশু ও তরুণদের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। কারণ তারা দীর্ঘ সময় ধরে ইয়ারবাড ব্যবহার করে এবং অনেক ক্ষেত্রে বন্ধুদের সঙ্গে একই ইয়ারবাড ভাগাভাগি করে নেয়। এতে একজনের কান থেকে অন্য জনের কানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—ইয়ারবাড নিরাপদ রাখতে সপ্তাহে অন্তত একবার নরম কাপড় বা তুলোতে সামান্য অ্যালকোহল বা জীবাণুনাশক তরল দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। পরিষ্কারের পর সম্পূর্ণ শুকিয়ে নিয়ে ব্যবহার করতে হবে। অন্যের ইয়ারবাড ব্যবহার এড়িয়ে চলা এবং অসুস্থ অবস্থায় ইয়ারবাড ব্যবহার না করাই কানের সুস্থতার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: