শুকনো আঙুরই হচ্ছে কিশমিশ—প্রাকৃতিক মিষ্টি, ফাইবার ও নানা পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এক খাবার। এটি ক্ষীর, পায়েস, সেমাই, বিরিয়ানি বা অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় খাবারে ব্যবহৃত হয়। অনেকে সরাসরি শুকনো কিশমিশই খেয়ে থাকেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শুকনোর চেয়ে ভিজানো কিশমিশ খাওয়াই শরীরের জন্য বেশি উপকারী।
আধুনিক পুষ্টিবিজ্ঞান ও আয়ুর্বেদ উভয়ই কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাসকে ইতিবাচক হিসেবে দেখে। ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক মাস নিয়মিত ভেজানো কিশমিশ খেলে শরীরে দেখা যায় বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন।
ভেজানো কিশমিশ কেন বেশি উপকারী:
ভিজিয়ে রাখলে কিশমিশের প্রাকৃতিক চিনির ঘনত্ব কিছুটা কমে যায়, ফলে এটি সহজপাচ্য হয় এবং শরীরে পুষ্টি উপাদান শোষণের হার বাড়ে। কিশমিশের খোসা নরম হয়ে যায়, যা হজম প্রক্রিয়াকে আরও মসৃণ করে।
একমাস ভেজানো কিশমিশ খাওয়ার উপকারিতা:
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি:
কিশমিশে প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে। প্রতিদিন সকালে ভেজানো কিশমিশ খেলে এটি প্রাকৃতিক রেচক হিসেবে কাজ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও অন্ত্রের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক:
কিশমিশে থাকা পটাশিয়াম রক্তনালীকে শিথিল করে ও শরীরে সোডিয়ামের প্রভাব কমায়। নিয়মিত ভেজানো কিশমিশ খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
রক্তাল্পতা দূর করে:
কিশমিশ আয়রন ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্সে সমৃদ্ধ, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে। নিয়মিত খেলে রক্তাল্পতা, দুর্বলতা ও ক্লান্তি দূর হয়।
রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
কিশমিশে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে সর্দি-কাশি বা সাধারণ সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা ও লিভার পরিষ্কার রাখে:
ভেজানো কিশমিশ রক্ত পরিশোধনে সহায়তা করে। ফলে ত্বক উজ্জ্বল হয়, বলিরেখা কমে এবং লিভারের ডিটক্স প্রক্রিয়া উন্নত হয়।
খাওয়ার উপায়:
প্রতিদিন রাতে ৮-১০টি কিশমিশ পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে খালি পেটে কিশমিশগুলো চিবিয়ে খান এবং ভেজানো পানিটুকু পান করুন। নিয়মিত এক মাস অনুসরণ করলে এর সুফল চোখে পড়বে।
ভেজানো কিশমিশ শুধু স্বাদের নয়, স্বাস্থ্যের দিক থেকেও দারুণ উপকারী। এটি দেহের হজম, রক্তচাপ, রক্তের গুণমান ও ত্বকের উজ্জ্বলতা উন্নত করে সার্বিকভাবে শরীরকে রাখে সতেজ ও প্রাণবন্ত।
আলোকিত গৌড়/আ
মন্তব্য করুন: