[email protected] সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ফজরের নামাজে জাগার ১০টি উপায়: সামান্য অভ্যাসেই বদলাবে জীবনধারা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৩১

ফাইল ছবি

ফজরের নামাজ আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে প্রিয় ইবাদতগুলোর একটি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে অনেকেই এ সময় ঘুমের ঘোরে নামাজ মিস করেন। অথচ কিছু সহজ অভ্যাস ও নিয়ম মেনে চললে ফজরে জাগ্রত হওয়া কঠিন নয়। কোরআন-হাদিসের আলোকে নিচে দেওয়া হলো ফজরের নামাজে ওঠার ১০টি কার্যকর পরামর্শ—

১. তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া

রাসুলুল্লাহ (সা.) মাগরিবের আগে ঘুমানো এবং ইশার পর অনর্থক কথা বলা অপছন্দ করতেন।
হাদিস: আবু বার (রা.) বলেন, “আল্লাহর রাসুল (সা.) মাগরিবের আগে ঘুমানো এবং ইশার পর কথা বলা অপছন্দ করতেন।” (তিরমিজি, হাদিস ১৬৮)

২. পবিত্র অবস্থায় ঘুমানো

ঘুমের আগে অজু করে পবিত্র অবস্থায় থাকা, নির্ধারিত দোয়া পাঠ করা এবং ডান কাতে শোয়া সুন্নাহ। এতে ঘুমও ইবাদতে পরিণত হয়।

৩. নিয়ত ও দৃঢ় সংকল্প করা

ঘুমাতে যাওয়ার সময় নিয়ত করুন—“আমি ফজরের নামাজ জামাতে পড়ব।”
যার অন্তরে দৃঢ় ইচ্ছা থাকবে, সে সহজেই জেগে উঠতে পারবে। নিয়তই হলো জাগার প্রথম প্রেরণা।

৪. জাগার পর আল্লাহকে স্মরণ করা

রাসুল (সা.) বলেছেন,

“যখন কেউ ঘুমায়, শয়তান তার মাথার পেছনে তিনটি গিঁট বেঁধে দেয়... যদি সে আল্লাহকে স্মরণ করে, একটি গিঁট খুলে যায়; অজু করলে দ্বিতীয়টি, নামাজ পড়লে তৃতীয়টি।”
— (সহিহ বুখারি, হাদিস ১১৪২)

৫. একে অপরকে সহযোগিতা করা

পরিবারে সবাই একে অন্যকে নামাজে জাগানোর অভ্যাস করুন।
আল্লাহ বলেন,

“তুমি তোমার পরিবারকে নামাজের আদেশ দাও এবং এতে অবিচল থাকো।”
— (সুরা ত্বাহা, আয়াত ১৩২)

৬. অ্যালার্ম ব্যবহার করা

অ্যালার্ম ঘড়ি বিছানা থেকে দূরে রাখুন, যেন বন্ধ করতে উঠতে হয়। এতে ঘুম ভাঙা সহজ হবে।

৭. পানি ছিটিয়ে জাগানো

রাসুল (সা.) বলেছেন,

“আল্লাহ রহম করুন সেই পুরুষ ও নারীকে, যারা রাতের নামাজে উঠে জীবনসঙ্গীকে জাগায়। যদি সে উঠতে অস্বীকার করে, তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়।”
— (আবু দাউদ, হাদিস ১৩০৮)

৮. জেগেই উঠে পড়া

ঘুম থেকে ওঠার পর দেরি না করে দ্রুত বিছানা ছাড়তে হবে।
আয়েশা (রা.) বলেন, “নবী করিম (সা.) আজান শুনলেই লাফিয়ে উঠতেন।”
(সহিহ বুখারি, হাদিস ১১৪৬)

৯. দুপুরে অল্প বিশ্রাম নেওয়া

দুপুরে অল্প সময় বিশ্রাম (কায়লুলা) রাতে নামাজে ওঠা সহজ করে।
রাসুল (সা.) বলেন,

“দুপুরে কিছুটা বিশ্রাম নাও, কারণ শয়তান বিশ্রাম নেয় না।”
— (সহিহ বুখারি, হাদিস ৪৪৩১)

১০. পাপ ও গুনাহ থেকে দূরে থাকা

গুনাহ হৃদয়কে কঠিন করে দেয়, ফলে নামাজের আগ্রহ কমে যায়।
রাসুল (সা.) বলেছেন,

“ফিতনা হূদয়ের সামনে উপস্থিত হবে... যে তা গ্রহণ করবে, তার হৃদয়ে কালো দাগ পড়বে।”
— (সহিহ মুসলিম, হাদিস ২৩১)

বাস্তব শিক্ষা

একজন জেল কর্মকর্তা বলেছেন, “আমি ৪০ বছর ধরে কারাগারে কাজ করেছি। প্রতিটি বন্দিকে জিজ্ঞাসা করেছি—যেদিন জীবনে বিপর্যয় এলো, সেদিন কি তুমি এশা ও ফজরের নামাজ জামাতে পড়েছিলে?”
তিনি বলেন, “একজনও পাইনি যে দুই নামাজ জামাতে পড়েছিল।”

অতএব, নামাজ মানুষকে শুধু আল্লাহর নিকটে পৌঁছে দেয় না—বরং জীবনের বিপদ ও অন্ধকার থেকেও রক্ষা করে।

আলোকিত গৌড়/আ

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর